গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় ব্যবসায়ী লুৎফর মোল্লা হত্যা মামলায় ৩ জনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এসময় প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ সোমবার (১০ জুলাই) গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় সকল আসামীর আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার আমতালা গ্রামের শফিউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ হাওলাদার( ৩২), গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চর কুশলী গ্রামের পান্নু শিকদারের ছেলে আব্দুল্লাহ শিকদার (১৯) ও কুশলী গ্রামের মন্টু শিকদারের ছেলে সাজেদুল ইসলাম( ২৩)।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানাগেছে, লুৎফর মোল্লা দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসার জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে টাকা ধার দিতেন । ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা বাজারে চা পান করে পাওনা টাকা আদায় করতে একই উপজেলার চরকুশলী গ্রামে যান।
সেখান থেকে রাত ১০ টার দিকে লুৎফর রহমানের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। সেখান থেকে তিনি ফোনে কথা বলতে বলতে হেটে বাড়ির দিকে রওনা হন। পথিমধ্যে ওই এলাকার সোলাইমান শিকদারের বাগানের কাছে পৌঁছলে কে বা কারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর স্থানীয় নিজামুল মোল্যা নিহত লুৎফর মোল্লার ছেলে সজীব মোল্যাকে ফোনে বিষয়টি জানায়। পুলিশ নিয়ে সজিব ঘটনাস্থলে গিয়ে তার পিতাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
এঘটনায় কত্যাকান্ডের শিকার লুৎফর মোল্লার ছেলে সজীব মোল্লা বাদী হয়ে ৮ অক্টোবর টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ স্বাক্ষ্য ও শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক আজ সোমবার দুপুরে ৩ জনকে দোষীসাব্যস্ত করে ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বাদী নিহতের ছেলে সজিব মোল্লা বলেন, আমার বাবা হত্যার এ রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। আমরা সঠিক বিচার পেয়েছি। আশাকরি উচ্চ আদালতেও এ রায় বহাল থাকবে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আজগার আলী খান বলেন, মামলার রায়ে সঠিক বিচার পেয়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। অবিলম্বে এ রায় কার্যকরের দাবি জানাই আমরা।
মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী মো. আবু সুফিয়ান বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। শুধুমাত্র একটি স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে এ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি সেখান থেকে সকল আসামি বেকসুর খালাস পাবেন।